বিষুবরেখা (Tropic / Equator)
অক্ষাংশ (Latitude)
অক্ষাংশ নির্ণয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে-
সমাক্ষরেখা বা অক্ষরেখা (Line of Latitude)নিরক্ষরেখা থেকে প্রত্যেক মেরুর কৌণিক দূরত্ব 90°। এই কোণকে ডিগ্রী ও মিনিটে ভাগ করে নিরক্ষরেখার সমান্তরালে যে রেখা কল্পনা করা হয় তাকে সমাক্ষরেখা বা অক্ষরেখা বলে।
কর্কটক্রান্তি রেখা (Tropic of Cancer)23°30′ উত্তর অক্ষাংশ রেখাকে বলা হয় কর্কটক্রান্তি রেখা। এই রেখাটি উত্তর আমেরিকার দক্ষিণ ভাগ, আফ্রিকার উত্তরভাগ এবং এশিয়ার দক্ষিণভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছে। যে সকল দেশের উপর দিয়ে এই রেখাটি অতিক্রম করেছে সেগুলো হলো- মেক্সিকো, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ (যুক্তরাষ্ট্র), বাহামা, পশ্চিম সাহারা, মৌরিতানিয়া, মালি, আলজেরিয়া, নাইজার, চাঁদ, লিবিয়া, মিশর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, চীন এবং তাইওয়ান।
মকরক্রান্তি রেখা (Tropic of Capricorn)23°30′ দক্ষিণ অক্ষাংশ রেখাকে বলা হয় মকরক্রান্তি রেখা। এই রেখাটি দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ ভাগ, আফ্রিকার দক্ষিণভাগ এবং ওশেনিয়া মহাদেশের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। যে সকল দেশের উপর দিয়ে রেখাটি অতিক্রম করেছে সেগুলো হলো ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে, আর্জেন্টিনা, চিলি, টোঙ্গা, ফিজি, অস্ট্রেলিয়া, মাদাগাস্কার, মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, কুক দ্বীপপুঞ্জ (নিউজিল্যান্ড), নিউ ক্যালিডোনিয়া (ফ্রান্স)।
দ্রাঘিমারেখা (Lines of Longitude) বা মধ্যরেখা (Meridian)নিরক্ষরেখাকে ডিগ্রি, মিনিট ও সেকেন্ডে ভাগ করে প্রত্যেক ভাগবিন্দুর ওপর দিয়ে উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত যে রেখাগুলো কল্পনা করা হয় তাকে দ্রাঘিমারেখা বলে।
মূল মধ্যরেখা (Prime Meridian) :যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরের মধ্যে অবস্থিত গ্রিনিচ মানমন্দিরের ওপর দিয়ে উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত যে রেখাটাকে কল্পনা করা হয়েছে তাকে মূল মধ্যরেখা বলে। এর দ্রাঘিমাকে 0° ধরা হয়।
দ্রাঘিমা (Longitude)গ্রিনিচের মূল মধ্যরেখা থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে যেকোনো স্থানের কৌণিক দুরত্বকে সেই স্থানের দ্রাঘিমা বলে। ভূপৃষ্ঠে কোনো স্থানের দ্রাঘিমা দুইভাবে বের করা যায়-
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা (International Date Line)যে রেখা অতিক্রম করলে দিন ও তারিখের পরিবর্তন ঘটে তাকে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলে। যদি এই রেখা অতিক্রম করে পূর্ব থেকে পশ্চিমে যাওয়া হয় তবে একদিন বিয়োগ করতে হবে, আর যদি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে যাওয়া হয় তবে এক দিন যোগ করতে হবে। আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা মূলত 180° দ্রাঘিমারেখা হলেও এর মধ্যে কিছু পার্থক্য থাকে, কারণ এই রেখাটি আঁকাবাঁকা হয়। এই রেখাটি সম্পূর্ণভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের জলভাগের ওপর অবস্থিত। আর এই রেখাটি আঁকাবাঁকা না হলে এক দ্বীপের দুই পাশে দিনের পার্থক্য হতো ১ দিন! তাই স্থানীয় লোকদের সুবিধার জন্য এই রেখাটিকে আঁকাবাঁকা করে টানা হয়েছে।
প্রতিপাদ স্থান (Antipode)ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত কোনো বিন্দুর ঠিক বিপরীত দিকের বিন্দুকে ঐ বিন্দুর প্রতিপাদ স্থান বলে। অর্থাৎ পৃথিবীতে কোনো স্থান বরাবর মাটির নিচে যদি বিশাল একটা লম্বা লাঠি ঢুকিয়ে সেটাকে পৃথিবীর বিপরীত বিন্দু দিয়ে বের করা হয়, তবে সেই বিন্দুটিই হচ্ছে প্রতিপাদ স্থান। প্রতিপাদ স্থান দুটোর মাঝে সময়ের পার্থক্য ১২ ঘণ্টা হয়।